ছুটির গল্প
ঢাকার একটি কর্পোরেট হাউজে
কাজ করা কয়েকজন তরুণ, তাদের কাজের ধরনের কারণে প্রতি মাসের অধিকাংশ সময় ঢাকায় ফ্যামিলি রেখে দেশ বিদেশের বিভিন্ন হোটেল রিসোর্টে থাকতে হয়। ২০০৬ হতে ২০১০ সালের মধ্যে তারা বাংলাদেশের প্রতিটি থানা এবং দুর্গম এলাকা ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করে। কাজের সাথে সাথে লোকজ ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার এবং প্রান্তিক মানুষের সাথে মেশার বিরল অভিজ্ঞতা অর্জন করে। জেলা এবং বিভাগীয় শহরের সবগুলি হোটেল মোটেল এবং রিসোর্টে থাকার এবং দেশিও পর্যটন সেবার অম্ল মধুর অভিজ্ঞতা অর্জন করে। হসপিটালিটি সার্ভিস ও ট্যুরিজম সম্পর্কে তাদের একটা ধারণা হয়। মানুষের ব্যাপক চাহিদা এবং এই শিল্পের অপার সম্ভাবনার আইডিয়া তাদের আড্ডাবাজি ও দুরন্তপনার গল্পে চলে আসে। তারই ধারাবাহিকতায় যান্ত্রিক জীবনে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষ ও পরিবার পরিজনের কাঙ্খিত ছুটি ও অবসর কাটানোর জন্য একটা ঠিকানা তৈরি করার স্বপ্ন দেখা শুরু করে পঞ্চপাণ্ডব খ্যাত পাঁচ বন্ধু।
২০১২ সাল। স্বপ্নবাজ তরুণদের জন্য একটি বিশেষ বছর। তাদের স্বপ্নের জানালায় উঁকি দেয় কবিগুরুর ছুটি কবিতা। ১২ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখ বুধবার গাজীপুরের অরণ্য ঘেরা সুকুন্দি গ্রামে যাত্রা শুরু করে এই তরুণদের
স্বপ্নের উদ্যোগ ছুটি রিসোর্ট। বাংলাদেশে ইকো ট্যুরিজম এর বিকাশ, বিস্তার এবং পর্যটনকে মানুষের নিকট সহজলভ্য করা ও এই শিল্পকে পরিবেশ বান্ধব করার এক আনন্দ যাত্রা শুরু হয় এই বন্ধুদের, যা এখনো চলমান। এই ১৩ বছরের পথ চলায় আপনাদের সার্বিক সহযোগীতা এবং ভালোবাসায় ছুটি আজ একটি সুপরিচিত নাম। সকলের আস্থার ঠিকানা ছুটির নতুন আইডিয়া, গুনগত সেবা, মানুষের ব্যাপক চাহিদা ও আগত অতিথিগনের প্রেরণায় এই শিল্পকে আরো সহজলভ্য ও ঢাকার কাছে আনার জন্য ২০১৭ সালে পূর্বাচল উপশহর সংলগ্ন রাথুরা গ্রামে ছুটির অপর একটি শাখা খোলা হয়, যা ছুটি রিসোর্ট পূর্বাচল নামে পরিচিত। এটি এখন ঢাকার সবচেয়ে কাছের রিসোর্ট।
হোমবাউন্ড হেরিটেজ ট্যুরিজম এর অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশে। এ শিল্পের আগামী সম্ভাবনার দিনগুলি ছুটির শক্তি ও প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশে ইকো ট্যুরিজমকে জনপ্রিয় করার জন্য আমরা কাজ করতে ভালোবাসি।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পর্যটন সেবাকে সহজ ও সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার নাগালে আনার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করি এবং আনন্দ পাই। তারই ধারাবাহিকতায় পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ছুটির পরিধি সম্প্রসারণের জন্য বিগত ২০২২ সালে মেরিন ড্রাইভ রোডে শুরু হয়েছে ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার এবং ২০২৩ সালে চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলে শুরু করা হয়েছে সালতানাত টি রিসোর্ট। ২০২৭ সালের মধ্যে এই দুটি রির্সোটের নির্মাণ কাজ শেষ করে পরিপূর্ণভাবে সেবা প্রদান করতে সক্ষম হবে।
মেট্রোপলিটন ঢাকার যান্ত্রিক সমৃদ্ধি এবং মানুষের ডিভাইস নির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই যান্ত্রিক নগর জীবনে এক চিলতে আনন্দের জন্য ১ থেকে ২ ঘণ্টার ড্রাইভ ডিসটেন্সে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটির দিনে হাপিয়ে
উঠা মানুষ অবসর কাটাতে চায়। প্রাকৃতিক পরিবেশে রাত কাটাতে চায়। অর্থাৎ ঢাকার আশেপাশে ইকো ট্যুরিজম এর ব্যাপক চাহিদা ও সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঢাকার আশেপাশে ছুটি রিসোর্টের পরিধি আরো বাড়ানোর জন্য সম্প্রতি ২০২৪ সালে গাজীপুরের পূবাইলে ছুটি অরণ্যবাস নামে নতুন রিসোর্টের স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছে। এই রিসোর্টেও ছুটির অন্যান্য রিসোর্টের মত উন্নত মানের সেবা এবং গুনগত মান নিশ্চিত করা হবে ।
দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও আমরা ছুটির পরিধি বৃদ্ধি করতে চাই। আগামী দিনগুলোতে ছুটির পরিধি বৃদ্ধির জন্য আপনাদের সহযোগীতা ও ভালোবাসা একান্ত কাম্য। আমাদের এই স্বপ্ন যাত্রায় আপনিও স্বপ্ন সারথী। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও বিস্তারে আপনিও সহ অংশীদার। আপনারা যারা ছুটি রিসোর্ট হতে সেবা গ্রহণ ও বারবার রিসোর্ট ভিজিট করে আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন, আপনাদের ভালোবাসা এবং ফিডব্যাক ছুটির অগ্রযাত্রা ও অনুপ্রেরণার উৎস । আগামী দিনগুলিতে ছুটির সাথে থাকার জন্য আপনাদেরকে আহ্বান জানাই। বিগত ১৩ বছরে যারা অতিথি হিসেবে আমাদের আতিথেয়তা গ্রহণ করেছেন এবং আগামীতেও যারা আমাদের রিসোর্ট এ আসবেন তাদের সকলের জন্য অগ্রীম শুভেচ্ছা।